শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১১

ভূত নিয়ে একটি সত্য ঘটনা…..


যারা ভূতে বিশ্বাস করেন না, বা করতে চান না তাদেরকে আজকে একটা সত্য ঘটনা শুনাব-

আমি সবসময় ঢাকা থেকে রাত্রে বাড়িতে যায়কারন ছুটি পাই কম আবার চিন্তা করি রাত্রে চলে গেলে পরদিন সকালটা বাসা থেকেই শুরু করা যাবেছাত্র অবস্থায় ক্লাস শেষ করেই রওনা হয়ে যেতামএখনও অফিস শেষ করেই সোজা মহাখালী তারপর ময়মনসিংহ হালুয়াঘাটমোটামুটি ছয়ঘন্টা
একদিন ক্লাস শেষ করে বাড়ী রওনা হলাম
আমাদের বাজারে যেতে যেতে রাত ১২ টা বেজে গেলবাজারে গিয়ে দেখি সুবাসআমার বাল্য বন্ধুআমাকে দেখেই বলল আমরা তো প্রতিদিন রাত্রে কদমতলী আড্ডা মারি, তুই খেয়ে চলে আসিস
বাজারেই আমার বাসাবাসায় গিয়ে আম্মার সাথে কথা বলতে বলতে খাওয়া শেষ করলাম১টার দিকে বাজারে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ভাবলাম সবাই হয়তো চলে গেছেআমি দুইটা সিগারেট কিনে কদমতলী রওনা হলামবাজার থেকে কদমতলী সিকি কি.মি.
তখন আষাঢ় মাসআকাশে চাদও আছেকিন্তু আষাঢ়ের মেঘ এবং চাদের আলো দু্ইটা মিলে একটা অদ্ভুদ আলো-আধারের খেলা চলছে- এই কালো অন্ধকার, আবার যেন ভরা পূর্ণিমাএকটা সিগারেট ধরিয়ে রাস্তা হাটছিকিছুটা ভয়ও লাগছেএমন রাতে একা একা হাটলে ভূত-প্রেতের কথা একটু বেশীই মনে পড়ে
বামের ঘন জঙ্গল থেকে ঝি ঝি পোকার শব্দে একটা অদ্ভুদ সুর যেন সৃষ্টি হচ্ছেযে সুরের তালে তালে নিজেকে নিয়ে খুব হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করেমাঝে মাঝে গভীর জঙ্গল থেকে দু-একটি কাক বড্ড বেসুরো কন্ঠে কা কা করছেমনে হচ্ছে কোন মাংসখেকো রাক্ষস যেন কলিজাটা ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে
আমি কদমতলীর কাছাকাছি যে জায়গায় শশানঘাটটা ঠিক সে জায়গায় চলে আসলামএইখান থেকে আমাদের যে জায়গায় বসে আড্ডা দেওয়ার কথা সেই জায়গা টা স্পষ্ট দেখা যায়আমি কাউকেই দেখতে পেলাম নামনের ভিতর একটা ভয়ও জেগে উঠলএই কারনে গভীর জঙ্গলের পাশ দেয়ে পিছনেও যেতে ইচ্ছে করছেনাকারন এই জায়গার বামদিকে কংশ নদী, আর ডানদিকে খোলা মাঠ যার ধরুন গা শিরশির করা অন্ধকার ভাবটা এইখানে নেই
আমি সোজা কদমতলী গিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে নদীর ঢেউ দেখছিভয়টা কাটানোর জন্য একটু জোড় করেই যেন অন্যমনস্ক হয়ে যেতে চাইলামমাঝে মাঝে কয়েকটা কলাগাছ নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছেদূর থেকে মনে হচ্ছে কোন লাশ ভেসে যাচ্ছেমৃত প্রাণীর গন্ধে বমি হওয়ার অবস্থা
হঠাৎ……হঠাৎ………..একটি কান্নার শব্দ শুনতে পেলামইঁ..ইঁ..ইঁ..ইঁ..ইঁ..ইঁ..কিছুটা ভয় পেয়ে গেলামআমার কাছ থেকে হাত বিশেক দূরে ঠিক আমার বাম দিকে তাকিয়ে দেখি একটি ঘোমটা দেওয়া মহিলা বসে আছেআর ঐ খান থেকেই কান্নার আওয়াজ আসছেভয়ে আমার আত্না চলে যাওয়ার যোগাড়শরীর দিয়ে ঘাম পানির মত বের হচ্ছেযেন আমি কোন ঝড়নার নিচে দাড়িয়ে আছিডাকব ডাকব ভেবেও না ডেকে সোজা বাসার দিকে রওনা হলাম
বাসায় গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে শুয়ে পড়লামপরদিন সকালে আম্মাকে সব ঘটনা খুলে বললে আম্মা বলল সুবাস তো ময়মনসিংহ গিয়েছিল তিনদিন আগে, সেতো আসবে আরও পরেআমিতো অবাক তাহলে সুবাসের চেহারা নিয়ে আমাকে কে বলেছিল কদমতলী যাওয়ার জন্য
শেষে আম্মা যা বলেছিল তা ছিল এইরকম-৮৮ সালের বন্যার সময় নৌকায় করে বরযাত্রী বউ নিয়ে যাওয়ার সময় কদমতলী নৌকা ডুবে যায়সবাই তীরে উঠলেও কনে আর উঠতে পারিনিসেই থেকে

1 টি মন্তব্য: