যারা ভূতে বিশ্বাস করেন না, বা করতে চান না তাদেরকে আজকে একটা সত্য ঘটনা শুনাব-
আমি সবসময় ঢাকা থেকে রাত্রে বাড়িতে যায়। কারন ছুটি পাই কম আবার চিন্তা করি রাত্রে চলে গেলে পরদিন সকালটা বাসা থেকেই শুরু করা যাবে। ছাত্র অবস্থায় ক্লাস শেষ করেই রওনা হয়ে যেতাম। এখনও অফিস শেষ করেই সোজা মহাখালী – তারপর ময়মনসিংহ – হালুয়াঘাট। মোটামুটি ছয়ঘন্টা।
একদিন ক্লাস শেষ করে বাড়ী রওনা হলাম।
আমাদের বাজারে যেতে যেতে রাত ১২ টা বেজে গেল। বাজারে গিয়ে দেখি সুবাস।আমার বাল্য বন্ধু। আমাকে দেখেই বলল আমরা তো প্রতিদিন রাত্রে কদমতলী আড্ডা মারি, তুই খেয়ে চলে আসিসবাজারেই আমার বাসা। বাসায় গিয়ে আম্মার সাথে কথা বলতে বলতে খাওয়া শেষ করলাম।১টার দিকে বাজারে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ভাবলাম সবাই হয়তো চলে গেছে। আমি দুইটা সিগারেট কিনে কদমতলী রওনা হলাম। বাজার থেকে কদমতলী সিকি কি.মি.।
তখন আষাঢ় মাস। আকাশে চাদও আছে। কিন্তু আষাঢ়ের মেঘ এবং চাদের আলো দু্ইটা মিলে একটা অদ্ভুদ আলো-আধারের খেলা চলছে- এই কালো অন্ধকার, আবার যেন ভরা পূর্ণিমা। একটা সিগারেট ধরিয়ে রাস্তা হাটছি। কিছুটা ভয়ও লাগছে। এমন রাতে একা একা হাটলে ভূত-প্রেতের কথা একটু বেশীই মনে পড়ে।
বামের ঘন জঙ্গল থেকে ঝি ঝি পোকার শব্দে একটা অদ্ভুদ সুর যেন সৃষ্টি হচ্ছে। যে সুরের তালে তালে নিজেকে নিয়ে খুব হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। মাঝে মাঝে গভীর জঙ্গল থেকে দু-একটি কাক বড্ড বেসুরো কন্ঠে কা কা করছে। মনে হচ্ছে কোন মাংসখেকো রাক্ষস যেন কলিজাটা ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আমি কদমতলীর কাছাকাছি যে জায়গায় শশানঘাটটা ঠিক সে জায়গায় চলে আসলাম। এইখান থেকে আমাদের যে জায়গায় বসে আড্ডা দেওয়ার কথা সেই জায়গা টা স্পষ্ট দেখা যায়। আমি কাউকেই দেখতে পেলাম না। মনের ভিতর একটা ভয়ও জেগে উঠল। এই কারনে গভীর জঙ্গলের পাশ দেয়ে পিছনেও যেতে ইচ্ছে করছেনা। কারন এই জায়গার বামদিকে কংশ নদী, আর ডানদিকে খোলা মাঠ – যার ধরুন গা শিরশির করা অন্ধকার ভাবটা এইখানে নেই।
আমি সোজা কদমতলী গিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে নদীর ঢেউ দেখছি। ভয়টা কাটানোর জন্য একটু জোড় করেই যেন অন্যমনস্ক হয়ে যেতে চাইলাম। মাঝে মাঝে কয়েকটা কলাগাছ নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে। দূর থেকে মনে হচ্ছে কোন লাশ ভেসে যাচ্ছে। মৃত প্রাণীর গন্ধে বমি হওয়ার অবস্থা।
হঠাৎ……হঠাৎ………..একটি কান্নার শব্দ শুনতে পেলাম। ইঁ..ইঁ..ইঁ..ইঁ..ইঁ..ইঁ..। কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম। আমার কাছ থেকে হাত বিশেক দূরে ঠিক আমার বাম দিকে তাকিয়ে দেখি একটি ঘোমটা দেওয়া মহিলা বসে আছে। আর ঐ খান থেকেই কান্নার আওয়াজ আসছে। ভয়ে আমার আত্না চলে যাওয়ার যোগাড়। শরীর দিয়ে ঘাম পানির মত বের হচ্ছে। যেন আমি কোন ঝড়নার নিচে দাড়িয়ে আছি। ডাকব ডাকব ভেবেও না ডেকে সোজা বাসার দিকে রওনা হলাম।
বাসায় গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে শুয়ে পড়লাম। পরদিন সকালে আম্মাকে সব ঘটনা খুলে বললে আম্মা বলল সুবাস তো ময়মনসিংহ গিয়েছিল তিনদিন আগে, সেতো আসবে আরও পরে। আমিতো অবাক তাহলে সুবাসের চেহারা নিয়ে আমাকে কে বলেছিল কদমতলী যাওয়ার জন্য।
শেষে আম্মা যা বলেছিল তা ছিল এইরকম-”৮৮ সালের বন্যার সময় নৌকায় করে বরযাত্রী বউ নিয়ে যাওয়ার সময় কদমতলী নৌকা ডুবে যায়। সবাই তীরে উঠলেও কনে আর উঠতে পারিনি। সেই থেকে
Daronn
উত্তরমুছুন